প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের জন্য একটি বক্তব্য

শুভ সকাল/দুপুর/সন্ধ্যা।

আজকের এই স্মৃতিমেদুর অনুষ্ঠানে উপস্থিত আমার প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠানের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ, আয়োজক কমিটির সদস্যবৃন্দ, আমার অগ্রজ, অনুজ এবং আমার প্রিয় সহপাঠী ও বন্ধুরা।

আসসালামু আলাইকুম এবং সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।

কতটা বছর পর আমরা আজ আবারও একত্রিত হয়েছি আমাদের প্রিয় প্রাঙ্গণে, আমাদের শেকড়ের কাছে। আজকের এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সত্যিই কঠিন। এই মাঠে, এই ক্লাসরুমে, এই করিডোরে পা রাখার সাথে সাথেই যেন মনে হচ্ছে, আমরা কোনো টাইম মেশিনে চড়ে আমাদের সোনালী অতীতে ফিরে গেছি। সেই দিনগুলো, যখন আমাদের কাঁধে আজকের মতো এত দায়িত্বের বোঝা ছিল না, ছিল শুধু একরাশ স্বপ্ন আর অফুরন্ত প্রাণশক্তি।

মনে পড়ছে ক্লাসরুমের সেই পরিচিত কোলাহল, শিক্ষকদের স্নেহমাখা শাসন, লাইব্রেরির নীরবতা আর ক্যান্টিনের সেই шумশান আড্ডা। টিফিন ভাগ করে খাওয়া, একসাথে মাঠে খেলাধুলা করা, পরীক্ষার আগের রাতে দল বেঁধে পড়াশোনা—এইসব ছোট ছোট স্মৃতিগুলোই আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সঞ্চয়। আমাদের আজকের পরিচয়ের পেছনে, আমরা আজ যে যেখানেই থাকি না কেন, তার ভিত্তি স্থাপন করে দিয়েছিল এই প্রিয় প্রতিষ্ঠান এবং আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকেরা।

আজ আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আমাদের সেইসব শিক্ষকদের, যাঁরা কেবল আমাদের পাঠ্যবইয়ের জ্ঞানই দেননি, শিখিয়েছেন নৈতিকতা, সততা আর স্বপ্ন দেখার সাহস। তাঁরাই আমাদের হাতে ধরে শিখিয়েছেন কীভাবে জীবনের পথে হাঁটতে হয়। তাঁদের কাছে আমরা চিরঋণী।

এখানে আজ আমরা অনেকেই উপস্থিত, যারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সফল ও প্রতিষ্ঠিত। কেউ হয়তো ডাক্তার, কেউ প্রকৌশলী, কেউ ব্যবসায়ী, আবার কেউ হয়তো শিক্ষকতা বা শিল্প-সাহিত্য নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের পথগুলো ভিন্ন ভিন্ন হলেও আমাদের সবার সূচনাবিন্দু কিন্তু ছিল একই—আমাদের এই প্রিয় বিদ্যাপীঠ। আজ সবাইকে একসাথে দেখে উপলব্ধি হচ্ছে, আমরা একটি পরিবার, একটি অভিন্ন সুতোয় গাঁথা একটি মালা।

আসুন, আজকের এই মিলনকে আমরা কেবল স্মৃতিচারণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রাখি। আসুন, আমরা আমাদের এই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করি। আমরা সম্মিলিতভাবে আমাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারি, বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি। আমাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ তাদের চলার পথকে আরও মসৃণ করতে পারে।

আমার বক্তব্য আর দীর্ঘায়িত করব না। এই চমৎকার আয়োজনের জন্য আমি আয়োজক কমিটিকে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আর আমার সকল বন্ধু ও സഹপাঠীদের ধন্যবাদ জানাই দূর-দূরান্ত থেকে এসে এই মিলনমেলাকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য।

আমাদের এই মিলন অব্যাহত থাকুক, আমাদের বন্ধুত্ব অটুট থাকুক। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

বক্তব্যটিকে আরও কার্যকর করার জন্য কিছু টিপস:

  • নির্দিষ্ট স্মৃতি উল্লেখ করুন: আপনার ব্যাচের কোনো মজার বা উল্লেখযোগ্য ঘটনা উল্লেখ করুন, যা সবার মনে নাড়া দেবে (যেমন: কোনো শিক্ষকের বিশেষ কোনো উক্তি, কোনো পিকনিক বা শিক্ষাসফরের স্মৃতি)।
  • শিক্ষকদের নাম নিন: যদি সম্ভব হয়, দুই-একজন জনপ্রিয় বা প্রয়াত শিক্ষকের নাম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করুন।
  • প্রতিষ্ঠানের মূলমন্ত্র: আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো মূলমন্ত্র (motto) বা সঙ্গীত থাকলে, সেটি বক্তব্যে উল্লেখ করতে পারেন।
  • পারস্পরিক সংযোগ: বক্তব্যের সময় শ্রোতাদের সাথে চোখ মেলান এবং প্রশ্ন করতে পারেন, যেমন: “তোমাদের কি মনে আছে…?”
  • আন্তরিকতা: আপনার বক্তব্যটি স্ক্রিপ্ট পড়ার মতো না বলে, মন থেকে আন্তরিকভাবে বলার চেষ্টা করুন। আবেগই এই ধরনের বক্তব্যের প্রাণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top